১০ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার | বাংলা কনভার্টার
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টার দিকের এ ঘটনায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স, বিবিসি। সরকারিভাবে নিহতের এই সংখ্যা জানানো হলেও সংখ্যাটি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপে কন্তে। বার্তা সংস্থা এএনএসএ-র প্রতিবেদনে দমকল সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৩৫ জনে দাঁড়াতে পারে। প্রবল বৃষ্টির মধ্যে একটি টাওয়ারসহ সেতুটির ৫০ মিটার উঁচু একটি অংশ ধসে পড়ে। ওই সময় সেতুর এই অংশটিতে প্রায় ৩৫টি গাড়ি ছিল। বিশাল বিশাল কংক্রিটের স্লাব দুটি গুদাম, ট্রেন লাইন ও একটি নদী খাতের ওপর ধসে পড়েছে। এক টুইটে লিগুরিয়া অঞ্চলের সরকার জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ১৯টি লাশ শনাক্ত করা হয়েছে এবং গুরুতর আহত ১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে নয় জনের অবস্থা সঙ্কটজনক।সেতুটির যে অংশটুকু এখনও দাঁড়িয়ে আছে তার নিচ ও আশপাশের ভবনগুলো থেকে চারশতাধিক লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইতালির বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, সেতু ভেঙে পড়ে নিচে অবস্থানরত কেউ নিহত হননি বলে ধারণা করা হচ্ছে, শুধু ওপরে গাড়িতে যারা ছিলেন তারাই হতাহত হয়েছেন। দমকল কর্মীরা ধ্বংসস্তূওপের নিচে গলার আওয়াজ পেয়ে সাত জন জীবিতকে উদ্ধার করেছে বলে ইতালির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরএআই-কে জানিয়েছেন দমকল কর্মকর্তা ব্রুনো ফ্রাত্তাসি। “আরও লোককে জীবিত পাওয়া যাবে বলে আশা করছি আমরা,” বলেছেন পুলিশ কর্মকর্তা আলেসান্দ্রা বুচি। উপর থেকে নেওয়া ফুটেজে দেখা গেছে, মোরান্দি নামের সেতুটির ধসে পড়া ৮০ মিটার লম্বা অংশটির দুই পাশে ট্রাক ও গাড়ি আটকা পড়ে আছে। একপাশের ভাঙা অংশের কয়েক মিটার নিচে একটি ট্রাক ঝুলে আছে। ১৯৬০ দশকের শেষ দিকে এ১০ টোল সড়কের অংশ হিসেবে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। স্থানীয়রা সেতুটিকে নিজেদের ‘ব্রুকলিন ব্রিজ’ বলতেন। ইতালির বার্তা সংস্থা এএনএসএকে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, “ঠিক সাড়ে ১১টার পর আমি সেতুটির উপর বজ্রপাত হতে দেখেছি। তারপরই দেখলাম সেতুটি ধসে পড়ছে।”ইতালির পরিবহনমন্ত্রী ড্যানিলো টনিনেল্লি এ দুর্ঘটনাকে “বড় ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা বলে বর্ণনা করেছেন।” বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সেতুটির ধসে পড়া অংশটিতে ৩০টি গাড়ি ও পাঁচ থেকে ১০টি ট্রাক ছিল।প্রায় ৩০০ দমকলকর্মী সেতুটির ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জীবিতদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন। উদ্ধারকাজে প্রশিক্ষিত কুকুর ব্যবহার করছেন তারা। ৪০০ পুলিশ তাদের সহযোগিতা দিচ্ছে। জেনোয়া থেকে আসা ইতালির ডেপুটি পরিবহনমন্ত্রী এদোয়ার্দো রিক্সি বলেছেন, “জেনোয়াবাসী দিনে দুইবার সেতুটি ব্যবহার করতেন। ১৯৫০ এবং ১৯৬০-র দশকে নির্মিত অবকাঠামো নিয়ে আমরা বসবাস করতে পারবো না।”এক টুইটে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইতালির জনগণের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে সব ধরনের সাহায্যের জন্য প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন।