৬ মে ২০২৪, সোমবার | বাংলা কনভার্টার
মোঃ সাব্বির হাসান.
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের অসুস্থ এক চা বিক্রেতাকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে জেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ওই আর্থিক সাহায্য অসুস্থ পরিবারের সদস্য সায়েম হোসেনের নিকট বিরতন করেন সদরপুর ইউএনও পূরবী গোলদার।
চা বিক্রেতা অসুস্থ আবুল খায়ের (৪৭) এর বাড়ি সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামে। জেলা প্রশাসকের আর্থিক সাহায্যে হতদরিদ্রের সংসার পাল্টে গেল বলে জানিয়েছেন ওই পরিবারের সদস্য মোঃ সায়েম হোসেন। এ প্রসঙ্গে ইউএনও পূরবী গোলদার বলেন, এখন সায়েম কে আর চায়ের দোকানে কাজ করতে হবে না। ও সুন্দর ভাবে স্কুলে যাবে। তিনি আরও বলেন, আমরা প্রশাসনিকভাবে সায়েম এর অসুস্থ বাবার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়াসহ তাদের পরিবার নিয়মিত দেখাশোনা করছি।
আর্থিক সাহায্য বিতরণ কালে উপস্থিত ছিলেন, সদরপুর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জিনিয়া নাজনীন কল্পনা, সেপ্টোস ফোর এর সভাপতি মোঃ শামিম হাওলাদার, মাসুদ হাওলাদার, রিপন হাওলাদার, তানভির তুহিন।
জানা যায়, গত ১৯ শে জানুয়ারী সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান সেপ্টোস ফোর এর সভাপতি শামীম আহমেদ অসুস্থ চা বিক্রেতা আবুল খায়ের এর অনুপুস্থিতিতে তার ছোট ছেলে সায়েম চা বিক্রি করছিল। সায়েম খেজুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনির ছাত্র। সে তার বাবার পরিবর্তে অভাব অনটনের সংসারের যোগান দেওয়ার জন্য দোকানে নিজের হাতে চা প্রস্তুত করে ক্রেতাদের বিক্রির কাজে নিয়োজিত ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকের মাধ্যমে ওই ফেসবুক পোস্টটি চোখে পড়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়ার। পরে তিনি সদরপুর ইউএনও পূরবী গোলদারের মাধ্যমে অসুস্থ আবুল খায়ের (৪৭) কে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
সাহায্য গ্রহনকরা সায়েম সুত্রে জানাগেছে, সে খেজুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। ওরা তিন ভাই-বোনের মধ্যে সায়েম সবার ছোট। তার ভাই সবুজ (১২) সপ্তম শ্রেণী এবং একমাত্র বড় বোন বিউটি (১৭) সদরপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেনিতে পড়ে।
তাদের এ হতদরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনের ব্যক্তি বাবা আবুল খায়ের। একাধিকবার আবুল খায়েরের পেটে অস্ত্রোপচার করে পেটের পাথর অপসারণ করা হয়। বর্তমানে তিনি অসুস্থ হয়ে বিছানায় রয়েছে। পিতার অসুস্থতার কারনে পরিবারে হাহাকার নেমে এলে স্কুল ছাত্র সায়েম বাবার পেশার যোগান দেয়।
আবুল খায়ের এর চিকিৎসার খরচ যোগাতে ইতোমধ্যে পরিবারটির গরু, ছাগল বিক্রি করে এবং বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋন গ্রহন করে চিকিৎসার খরচ করা হয়েছে।