www.sadarpurkhobor.com

৫ মে ২০২৪, রবিবার | বাংলা কনভার্টার

শিরোনাম:

সদরপুরে সাড়াশি অভিযানে জেলেদের দেখা নেই পদ্মা নদীতে, নিধনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে মা ইলিশ


 মো.সাব্বির হাসান.    ২২ অক্টোবর ২০১৮, সোমবার, ৮:১১    জাতীয়


নদী থেকে জেলেদের পালানো দূশ্য।চরনাছিরপুর ইউনিয়নের মোল্যা কান্দি এলাকার ছবি।


ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে ইলিশ প্রজনণ মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষার জন্যে প্রতিনিয়ত অভিযান অব্যাহত রেখেছে সদরপুর মৎস্য অফিস।
দিনরাত সাড়াশি অভিযানের ফলে বর্তমানে নদীতে জেলেদের দেখা নেই। নৌকা জাল নদী থেকে উঠিয়ে ঘরমুখী হচ্ছে মৌসুমী জেলেরা। মৎস্য অধিদপ্তরের জনবল ও অন্যান্য বিষয়ে স্বপ্লতা থাকলেও মৎস্য কর্মকর্তা বাপি কুমার দাশ পুরো উদ্যমে নদীতে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান পরিচালনা করছেন। এ ছাড়াও নদীর বিভিন্নস্থানে ইলিশ বিক্রির খবর পাওয়ার পর পরই গুড়িয়ে দিচ্ছেন সে সব পশ্চাদপদ এলাকার ইলিশ বিক্রয়স্থল।
উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রায় দুই হাজার জেলে এ বছর নতুন জাল ও নৌকা তৈরি করেছেন ইলিশ শিকারের জন্যে বলে একটি সুত্রে জানা যায়। এরা প্রকৃত জেলে নয়। অধিকাংশ জেলে নামের ব্যক্তিই নানামুখী ব্যবসার সাথে জড়িত। নদীতে ইলিশ ধরার জন্যে উৎসুক হয়ে তারা নিজ এলাকায় এসেছেন। আরও জানা যায়, এলাকার এনজিও,মহাজনের নিকট সুদে টাকা নিয়ে জাল ও নৌকা তৈরি করেছেন ওইসব জেলে। ইলিশ শিকারের জন্য দুই থেকে তিন’শ হাতের একেকটি অবৈধ কারেন্ট জাল ক্রয় করে এনেছেন ঢাকার মুন্সীগঞ্জ এলাকা থেকে। জাল ও নৌকা বানাতে তাদের প্রায় দুই লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। একেকটি নৌকায় পাঁচজন করে শ্রমিক নেওয়া হয়। ওইসব শ্রমিকদের বেতন দিন মজুরী হিসাবে ৪থেকে ৫শ টাকা করে বেতন। শ্রমিক গুলো বেশীর ভাগ কুষ্টিয়া, পাবনা, নাটোর, রংপুর এলাকার। এরা সদরপুরে কৃষিকাজের জন্যে এসেছিলেন। বর্তমানে কাজ তেমন না থাকার কারনে ইলিশের অভিযানে নদে দিনমজুর হিসাবে কাজ করছেন। বর্তমানে ওইসব শ্রমিকরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন জেল এর ভয়ে। শ্রমিক সংকট ও জাল নৌকা অভিযানে আটক হওয়ার কারনে মৌসুমী জেলেরা তাদের পূর্বের পেশায় ফিরে যাচ্ছে নদী থেকে।
আরও জানা যায়, নদীতে দিনরাত দফায় দফায় অভিযান থাকার কারনে জেলেরা নদীতে জাল ফেলতে পারছে না। গোপনে নদীতে নামলেই অভিযানের জালে আটকে পড়ছে জেলেরা। জেল দন্ড ও অভিযানের জালে আটকে পড়ার ভয়ে নদী ছেড়ে দল বেধে পালাচ্ছে বর্তমানে জেলেরা।
২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ নিধন বিরোধী অভিযান রয়েছে। আর এ অভিযান সফল করার লক্ষ্যে অভিযান শুরুর আগেই সদরপুর মৎস্য কর্মকর্তা বাপি কুমার দাশ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করেন। এগুলো হচ্ছে- হাটবাজার, স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ, মসজিদের ইমামদের মাধ্যমে জনসাধারণকে সচেতন করা, ইলিশ মাছ ধরার জন্য স্পীডবোট ভাড়া না দেওয়া, বিশেষ করে জন প্রতিনিধিরা এলাকার জেলেদের নিয়ে উঠান বৈঠকের ব্যবস্থা করা।
একজন মৎস্য কর্মকর্তার দিনরাতের অভিযানের ফসল হিসাবে রক্ষা পাচ্ছে মা ইলিশ। দেশের জাতীয় মৎস্য সম্পদে আয়বর্ধক হয়ে উঠবে এমনিই প্রত্যাশা রয়েছে এ বছর। জেলা প্রশাসন ফরিদপুর ও সদরপুর উপজেলা প্রশাসনের এর সমন্বয়ে মা ইলিশ রক্ষার জন্যে পৃথক পৃথক অভিযানিক দল নদীতে অব্যাহত রাখা হয়েছে। অভিযান গুলোর দিনরাত নেতৃত্ব দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী হাকিম কামরুন নাহার, পারভেজ মল্লিক, কামরুল ইসলাম সোহাগ, আফরোজ শাহিন খসরু।
বর্তমানে ইলিশের প্রজনন মৌসুম চলছে। এ মৌসুমে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্যে নোনা পানি থেকে মিঠা পানিতে আসে। এ সময় পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ইলিশের আগমন ঘটে। মা ইলিশ সংরক্ষনের জন্য সরকার গত ৭থেকে ২৮অক্টোবর নদীতে সব ধরনের জাল ফেলা নিষিদ্ধ করেছে। নিষেধাজ্ঞার ২২দিন ইলিশ আহরন,বিপনন,মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কারাদন্ড ও জরিমানার বিধান রয়েছে। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান পরিচালনার জন্য উপজেলা প্রশাসন,মৎস্য অধিদপ্তর একটি ট্যাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। গত ১৬দিনের অভিযানে ১৭১জনআটক করা হয়েছে। তাদের কে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড হিসাবে জেল দেওয়া হয়েছে। আরও ৫জন কে ৫হাজার টাকা করে মোট ২৫হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৩লক্ষ ৫০হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করে আগুনে পোড়ানো হয়েছে। নদী থেকে ৩৩৫কেজি মা ইলিশ জব্দ করে উপজেলার প্রায় ২৫টি এতিমখানার মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মৎস্য কর্মকর্তা বাপি কুমার দাশ বলেন, অভিযানের শুরু থেকে নিষেধাজ্ঞার শেষ দিন পর্যন্ত প্রতিনিয়ত অভিযান চলবে। জাতীয় ইলিশ সম্পদ রক্ষার্থে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। জেলেরা সুযোগ সন্ধানী। নদীতে নামলেই ধরা খাচ্ছে। জেল দেওয়া আমাদের কাম্য নয়। জেলেরা ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকলে ইলিশ সম্পদে আমরা অনেক এগিয়ে যেতে পারতাম। বিভিন্ন ভাবে তাদের বোঝানো হয়েছে কিন্তু অসাধু ব্যক্তিরা ইলিশ ধরার জন্যে নদীতে নেমে পড়ে। অভিযান আরও জোড়দার করা হচ্ছে আশা করি বাকি দিন গুলো নদী নৌকা ও জাল শূন্য থাকবে।



সংবাদটি এ পর্যন্ত পড়েছেন   799   জন পাঠক

 আরও খবর


















সর্বাধিক পঠিত

শুদ্ধাচারে ফরিদপুরের সেরা ইউএনও হলেন সদরপুরের পূরবী গোলদার
সদরপুরে সেফটি ট্যাংকিতে প্রান গেল স্বামী স্ত্রীর
ফরিদপুরে র‌্যাবের হাতে মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ কামাল হাওলাদার,মেহেদী হাসান ফয়সাল, মোঃ টুলু চৌধুরী আটক
সদরপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরার দায়ে ১৩জেলে কে ১বছর করে কারাদন্ড, নদী থেকে ৮কিশোর আটক
একজন নিক্সন প্রেমি রিপনের রক্তের দাগ...........
সদরপুরে ক্লাশ চলাকাশে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো নবম শ্রেণির ছাত্রী
সদরপুরে সাপের কামড়ে স্কুল ছাত্রের মৃত্যু
সদরপুরে চাউল বিক্রির অনিয়মে ডিলারের জেল
সদরপুরে ট্রাকের চাকায় নিহত হলো স্কুল ছাত্র সজীব
সদরপুরে মোটর সাইকেল চোর চক্রের দুই সদস্য আটক-স্থানীয় সংঘবদ্ধদের নাম প্রকাশ