৪ মে ২০২৪, শনিবার | বাংলা কনভার্টার
আধুনিকতার ছোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। মানুষের জীবনেও এসেছে অনেক সৌখিনতা-স্বাচ্ছন্দ। এই আধুনিককালে বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের যুগে পৃথিবীর মানুষ যখন ভাসছে ঠিক তখনো, সদরপুরের ঢেউখালী ইউনিয়নের ঢেউখালী বাজারে চোখে পড়ে মান্দাতা আমলের সেই নরসুন্দরদের। ইতিপূর্বে পুরুষ মানুষরা এবং ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা গ্রাম-গঞ্জের ফুটপাত, হাট-বাজারে সেই, নরসুন্দরদের পিঁড়ি বা কাঠের টুলে বসিয়ে চুল-দাঁড়ি ছাঁটাতেন। আজকের এ যুগে এইতো মাত্র ১০-১২ বছর পূর্বেও যা ছিল তা যেন রূপকথার গল্পই মনে হবে-অনেকের কাছেই। এইতো সে দিনও ধানের মৌসুমে গ্রাম বাংলার নরসুন্দরদের এককালীন কিছু ধান দিয়ে সারা বছর পরিবারের পুরুষ সদস্যদের এবং ছোট ছেলে মেয়েদের চুল-দাঁড়ি ছাটা এবং কামিয়েছেন। সেই সময় পেরিয়ে বর্তমান যুগে বিলাসবহুল সেলুনের প্রথা চালু হয়ে গেছে। আবার শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত ও আকর্ষণীয় চেয়ারে বসে এখন হরেক রকম ডিজাইনের চুল ছাঁটা হলেও সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী বাজার গ্রামের নরসুন্দর চিনাই শীল সেই সনাতনী ভ্রাম্যমান সেলুনই এখনো চালু রেখেছেন। স্থানীয় বাজারে একটি দোকান নিতে গেলে জামানত দিতে হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। পরিবারে অস্বচ্ছলতা থাকায় তিনি উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বসে এভাবেই কাজ করে থাকেন। অপরদিকে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন হাট-বাজারে এখনো চোখে পড়ে সেই সনাতণী প্রথার চুল কাটা বা ছাঁটার ভ্রাম্যমান কাঠের পিড়ি বা টুলে বসা নরসুন্দরদের ভ্রাম্যমান সেলুন। সদরপুরের দু এক জায়গা ছাড়া এখন চোখে পড়ে না ওইসব নরসুন্দরদের। যাদের কথা এখন আর কেউ ভাবেন না। এসব নরসুন্দরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাপ-দাদার পেশাকে এখনো টিকিয়ে রেখেছেন তারা। তাছাড়া রুটি-রুজির সন্ধানেই তারা ছুটে চলেন বিভিন্ন হাট-বাজারেতো বটেই এমনকি গ্রাম-গঞ্জ পর্যন্ত। প্রতি বড়হাট বারে তিন থেকে চার’শ টাকা আয় করে এসব নরসুন্দররা। এভাবেই চলছে তাদের অভাবের সংসার। নরসুন্দর চিনাই শীল জানান,বয়সের ভারে চলাচলে বড়ই কষ্ট হয়। চোখেও কম দেখি। জীবন-জীবিকার তাগিদে তবুও ঘরে বসে থাকতে পারিনা। বাঁচতেতো হবে! তাই এখনো কাজ করেই চলেছি,কি আর করবো বলেন ?