২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার | বাংলা কনভার্টার
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চরবিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনির ছাত্রী রুমা আক্তারের বাল্যবিয়ে ঠেকাতে পারেনি আদালত।
গত বৃহস্পতিবার সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের জরিপের ডাঙ্গি গ্রামের কবির শেখ তার মেয়েকে তুলে দেওয়ার জন্য বাড়িতে ধুমধাম করে ভূড়িভোজসহ নানা আয়োজন করেন। বিকেল ৪টার দিকে শতাধিক বরযাত্রীকে নিয়ে কনের বাড়িতে আসে বর। বর পাশের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের শেখ আহম্মদের ছেলে সেকেন্দার শেখ(২৫)। সেকেন্দার কুয়েত প্রবাসী।
বাল্য বিবাহের এ খবরটি জেনে সদরপুরের দায়িত্বরত চরভদ্রাসনের ইউএনও কামরুন্নাহার ও সদরপুরের সহকারি কমিশনার(ভুমি) জোবায়ের রহমান রাশেদকে বিকেল ৪টার দিকে জানিয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বিকেল ৪টা ২০মিনিটে ওই বাড়িতে হাজির হন। ওই সময় বাড়িতে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন চলছিল। ম্যাজিষ্ট্রটের উপস্থিতি টের পেয়ে বর ও কনে বিকেল ৫টার দিকে দ্রুত পালিয়ে যান। তাদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন কনের বাবা কবির শেখ বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সহকারি কমিশনার ভুমি ওই বাড়িতে যখন পৌঁছান তখন বিকেল ৫টা। ওই সময় তিনি বাড়িতে বিয়ের যাবতীয় আয়োজন দেখলেও বর কনে বা বর-কনের বাড়ির কোন লোককে বাড়িতে পাননি। প্রায় অর্ধঘন্টা বিয়ে বাড়িতে অবস্থান করে তাদের না পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিট্রেট ওই বাড়িতে থাকা কনের ফুফা মোঃ কাদের মৃধা কে কনের বাবাকে ওইদিন রাতে তার কার্যালয়ে হাজির হয়ে কেন বাল্য বিবাহের আয়োজন করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিয়ে যেতে বলা হয়ে ছিলো। ওই ব্যাখার ২দিন পার হলেও তার দেওয়া নির্দেশের ব্যাখার কোনো তথ্য এখনো জানা-জায়নি।
উল্লেখ্য, বুধবার ফরিদপুরে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে তাদের বিয়ে পড়ানো হয়ে ছিলো। নোটারী পাবালিকের বিয়ে সর্ম্পকে চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নিকাহ নামার কাজী মোঃ বোরহান হোসেন বলেন,এভিডেফিটের মাধ্যমে বিয়ে পড়ানো ও নিবন্ধন করা নিষিদ্ধ আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। গত ২৯-০৪-২০১৫ সালে তারা আইন মন্ত্রণালয় থেকে সে প্রজ্ঞাপনের আদেশ পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা নিদিষ্ট বয়স না থাকায় নিবন্ধন না করলে তারা কথিত লোকজনের মাধ্যমে নোটারী পাবলিকের আশ্রয় গ্রহন করেন যার কোনো বৈধতা নেই।
এ ব্যাপারে সদরপুর সহকারি কমিশনার(ভূমি)ও নির্বাহী ম্যাজিট্রেট মোঃ জোবায়ের রহমান রাশেদ তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তুলেন নি।
আজ শনিবার ওই ছাত্রীর বিদ্যালয়ে খোজ নিলে সে বিদ্যালয়ে আসেনি বলে জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ মালেক মিয়া।
এ ব্যাপারে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমার এলাকায় বাল্য বিয়ে কোনো ভাবেই কাম্য নয়। বাল্য বিয়ে সংশ্লিষ্ট থাকাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জরুরী দাবী জানান তিনি।
অপরদিকে ওই বাড়িতেও খোজ নিয়ে তাকে না পাওয়া গেলে তার এক প্রতিবেশী সুত্রে জানাগেছে সে তার শ্বশুর বাড়িতে রয়েছে। এ নিয়ে কোনো কিছুই হবে না সব ম্যানেজ করা হয়েছে বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন জানিয়েছেন।