১ মে ২০২৪, বুধবার | বাংলা কনভার্টার
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চর দড়িকৃষ্ণপুর গ্রামের কুদ্দুস মৃধা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে সদরপুর থানা পুলিশ। হত্যার মূল আসামী নিহতের বড় ভাই ইদ্রিছ মৃধাকে আটক করা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী ফাহিমা বেগম বাদি হয়ে নিহতের বড় ভাই ইদ্রিছ মৃধা(৪০) কে আসামী করে সদরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পরই নিজ এলাকা থেকে ইদ্রিছ মৃধা কে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় মামলার আসামী ইদ্রিছ মৃধা ফরিদপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট কোট ৩নং আমলি আদালতের নির্বাহী হাকিম সুমন হোসেনের নিকট ১৬৪ধারায় ঘটনার সত্যতা শিকার করে জবাববন্দি দিয়েছে। ঘটনার সাক্ষ্য হিসাবেও প্রতিবেশী গিয়াস মৃধা একই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মোঃ আক্কাচ আলী।
ঘটনার তদন্তের ভিত্তিতে জানা যায়, নিহত কুদ্দুস মৃধা একজন মাদক সেবনকারী ছিলেন। পূর্ব শত্রুতার জেরও কাজ করছিলো দুই ভাইয়ের মধ্যে। নেশায় আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সময় পরিবার ও প্রতিবেশীদের সাথে খারাপ আচরন ও বিবাদ করতেন। গত বুধবার ৪জুলাই রাত অনুমান ৩টার দিকে নেশা করে বাড়ি ফিরে কুদ্দুস। বাড়ি ফিরে স্ত্রীর সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাতে স্ত্রী ফাহিমা বেগম কে মারধর শুরু করে সে। ফাহিমা বেগমের আতœচিৎকারে বড় ভাই ইদ্রিস মৃধা,প্রতিবেশী গিয়াস মৃধা এগিয়ে আসে। ওই সময় ইদ্রিসের উপর ক্ষিপ্ত হয় নেশাগ্রস্থ কুদ্দুস। কথাকাটির এক পর্যায়ে ইদ্রিস মৃধা উঠানের পাশে থাকা মেহগুনি গাছের একটি ডাল দিয়ে কুদ্দুসের মাথায় আঘাত করে। আঘাতে কুদ্দুস মাটিতে নুয়ে পড়লে গুরুতর অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্যে মাইক্রোবাস আনে বাড়িতে। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই কুদ্দুসের মৃত্যু হয়।
আরও জানা যায়, এ বিষয় নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি ধাপাচাপা দিতে ব্যস্ত হয়ে উঠে পরিবারের অন্য সদস্যরা। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্যে অপবাদ চালিয়ে পরিবারের সদস্য বলেন, কুদ্দুছের মাথা খারাপ ছিল। সে তার স্ত্রীকে মারপিট করে দৌড়ে গিয়ে গাছে বাড়ি খেয়ে নিহত হয়। তারা ঘটনাটি পুলিশকে না জানিয়ে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করার প্রস্তুতি নেয়।
এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে সদরপুর থানা পুলিশ ওই এলাকায় যায়। লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে প্রাথমিক তদন্ত শেষে ফরিদপুর মর্গে পাঠানো হয় মরদেহ। ঘটনার বিষয় জানতে ওই সময় স্ত্রী ফাহিমা বেগম কে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে ঘটনার বিষয় খুলে বলেন স্ত্রী ফাহিমা বেগম। স্ত্রীর স্বীকারোক্তিতে হত্যা ঘটনার রহস্য বেরিয়ে আসে।
এরপর স্ত্রী ফাহিমা বেগম বাদী হয়ে সদরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় বড় ভাই গিয়াস মৃধাকে আসামী করা হয়। পরে তাকে পুলিশের অভিযানে আটক করা হয়। তদন্তকারি কর্মকর্তা এস আই আক্কাছ জানান, হত্যাকান্ডের সাথে নিহতের আত্মীয়স্বজনসহ কয়েক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। মামলা তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম গোপন রাখা হয়েছে।