www.sadarpurkhobor.com

১ মে ২০২৪, বুধবার | বাংলা কনভার্টার

শিরোনাম:

সোনালী আঁশে ভরপুর, ভালোবাসি ফরিদপুর- শ্লোগানে আজ ফরিদপুরে সোনালি স্বপ্নের দ্বারপ্রান্তে কৃষকের পাট


 অনলাইন ডেস্ক.    ২ জুলাই ২০১৮, সোমবার, ১০:৩২    জাতীয়


সোনালি আশের ঐতিহ্য ফরিদপুর অঞ্চলের ভালোমানের পাট। চারিদিকে তাকালেই দেখা মিলছে সবুজের সমাহার। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সোনালি আশের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে এই অঞ্চলের কৃষকেরা। বাতাসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দোল খাচ্ছে লিকলিকে শরীরে বাড়তে থাকা পাট গাছগুলো। তাইতো সোনালি আশের স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে চাষিরা। পাটের জন্য বিখ্যাত ফরিদপুর জেলা। গুণে ও মানে দেশসেরা এ জেলার পাট। তাই এ জেলার ব্রান্ডিং হিসেবে পাট সরকারি স্বীকৃতি পেয়েছে।

ফরিদপুর জেলা সদর, নগরকান্দা, বোয়ালমারী, মধুখালী ও সালথা উপজেলার গ্রামগুলির সবুজ শ্যামল বিস্তীর্ণ মাঠে চলতি মৌসুমে কোমর ছাড়িয়ে বুক সমান উচ্চতায় বেড়ে উঠা পাট ক্ষেতের সতেজতা ছড়ানো সবুজের আবিররাঙ্গা এ পরিবেশ চোখের সামনে তুলে ধরেছে শ্যামল বাংলার প্রাকৃতিক মুগ্ধতা। এবছর পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এ মৌসুমে সঠিক সময়ে পরিমাণমতো বৃষ্টি এবং অনুকূল আবহাওয়ায় পাটের ফলনও অন্য বছরগুলো থেকে অনেক ভালো হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জেলার বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের বাইখির, ধুলপুকুরিয়া, বনচাকী গ্রামে পাট ক্ষেতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে চাষিরা। এছাড়া নগরকান্দা, সালথা, মধুখালীর বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামগুলোর ক্ষেতে একই রকম চিত্র। বিস্তীর্ণ এলাকায়ও চোখে পড়ে সবুজের দ্যুতি ছড়ানো এ দৃশ্য। অনুকূল পরিবেশের সঙ্গে খাপ খেয়ে বাড়তে থাকা সবুজ পাট গাছগুলো সোনালি স্বপ্ন দেখাচ্ছে ফরিদপর অঞ্চলের কৃষকদের। আর স্বপ্নবিভোর কৃষক আশা করছেন বাম্পার ফলন ও ন্যায্য দামের।

ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ জেলায় ৮৩ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সেখানে চাষিরা আবাদ করেছে ৮৫ হাজারের হেক্টরেরও বেশি জমিতে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আবাদ ভালো হয়েছে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, বর্তমান সরকার খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন পণ্যে পরিবেশবান্ধব পাটের মোড়ক ব্যবহার করায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে পাটের উৎপাদন ও বাজার দর। ফলে গত কয়েক বছর ধরে প্রান্তিক পর্যায়ের চাষিদেরও পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে। সোনালি আঁশ ঘিরে সোনালি স্বপ্ন দেখছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। তিনি বলেন, এবছর পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সময়মত বৃষ্টি হওয়ায় পাট গাছগুলো ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, এ জেলার চাষিরা মূলত দুই জাতের পাট তোষা ও মেস্তা জাত আবাদ করে থাকে। এর মধ্যে তোষা জাতটি চাষিদের কাছে অধিক প্রিয়।

 

বিষয়টির সঙ্গে একমত পোষণ করে বোয়ালমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহায়মেন ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় পাট কম পরিশ্রমে অধিক লাভজনক একটি ফসল। কম খরচে ভালো ফলন হওয়ায় বর্তমানে কৃষকরা আবারো পাটচাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। গত কয়েক বছর ধরে পাটচাষের পরিমাণও বেড়েছে।

নগরকান্দা উপজেলার শশা গ্রামের চাষি রফিক মোল্লা বলেন, একটা সময় পাটই ছিল আমাদের ভরসার ফসল। বাপ-চাচারা কত কষ্ট করে আমাদেরকে সঙ্গে নিয়ে পাট চাষ করতেন। পানিতে ডুবে ডুবে জাগ দিতেন, ভালোভাবে পঁচলে তারপর মাচা পেতে আঁশ ছড়াতেন। কিন্তু হঠাৎ করেই যেনো সব কিছু নাই হয়ে গেল। ইদানীং আবারো পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধিতে আনন্দে এ পাট চাষি বলেন, কত মায়া লাগে, চিকন গাছে কচি কচি পাতা। পাট গাছ তো আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গেই মিশে আছে।

কানাইপুর ইউনিয়নের করিমপুর গ্রামের কৃষক আবদুল জলিল বলেন, গত বছর ফলন ভালো হওয়ায় এবং চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা এবারো পাট চাষের দিকে ঝুঁকেছে। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সঠিক সময় জমিতে বীজ বপন করার সুযোগ পাওয়ায় পাটের বাম্পার ফলন হবে। বাজারে ভালো দাম পেলেই সার্থক হবে পরিশ্রম।

জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোনালি আঁশের কাঙ্ক্ষিত দাম নিয়ে তাদের মাঝে কিছুটা শঙ্কা থাকলেও কাটার পর পচানোর জায়গা নিয়ে তেমন চিন্তা নেই। বৈশাখের শুরু থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের ধারা বর্ষা পর্যন্ত অব্যাহত থাকায় এবারে পাট পঁচাতে পানি নিয়ে তেমন চিন্তা করতে হবে না। এখন অপেক্ষা কেবল পাট গাছ থেকে সোনালি আঁশ ছাড়িয়ে তা বাজারে বিক্রি করা। সেখানে ন্যায্য দাম মিললেই কৃষকদের মুখে লেগে থাকা হাসিটা আরো রঙিন হবে। সীমানা ছাড়িয়ে যাবে সবুজ পাটগাছের সোনালি আঁশ ঘিরে তাদের স্বপ্নের বিস্তৃতি।

মধুখালী উপজেলার বাগাট গ্রামের পাটচাষি আশরাফ হোসেন বলেন, ফলনের পাশাপাশি দামও যদি ভালো পাওয়া যায়, তবে আগামীতে আরও বাড়বে পরিবেশবান্ধব এ আঁশ ফসলের আবাদ।

দেশীয় ও বিশ্ব বাজারে দিন দিন পাটের চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, গুণে ও মানে ফরিদপুরের পাট দেশ সেরা। এ জেলার পাটের আশে বিশেষ ধরনের বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না।

তিনি আরো বলেন, ফরিদপুর জেলা পাটের জন্য খ্যাত। একারণে জেলার ব্রান্ডিং পণ্য হিসেবে পাটকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলার স্লোগান পাটকে নিয়েই ‘সোনালী আঁশে ভরপুর, ভালোবাসি ফরিদপুর।’

সুত্রঃ শিপন ভাই,ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস।

 

 


সংবাদটি এ পর্যন্ত পড়েছেন   1066   জন পাঠক

 আরও খবর


















সর্বাধিক পঠিত

শুদ্ধাচারে ফরিদপুরের সেরা ইউএনও হলেন সদরপুরের পূরবী গোলদার
সদরপুরে সেফটি ট্যাংকিতে প্রান গেল স্বামী স্ত্রীর
ফরিদপুরে র‌্যাবের হাতে মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ কামাল হাওলাদার,মেহেদী হাসান ফয়সাল, মোঃ টুলু চৌধুরী আটক
সদরপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরার দায়ে ১৩জেলে কে ১বছর করে কারাদন্ড, নদী থেকে ৮কিশোর আটক
একজন নিক্সন প্রেমি রিপনের রক্তের দাগ...........
সদরপুরে ক্লাশ চলাকাশে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো নবম শ্রেণির ছাত্রী
সদরপুরে সাপের কামড়ে স্কুল ছাত্রের মৃত্যু
সদরপুরে চাউল বিক্রির অনিয়মে ডিলারের জেল
সদরপুরে ট্রাকের চাকায় নিহত হলো স্কুল ছাত্র সজীব
সদরপুরে মোটর সাইকেল চোর চক্রের দুই সদস্য আটক-স্থানীয় সংঘবদ্ধদের নাম প্রকাশ