১২ মে ২০২৪, রবিবার | বাংলা কনভার্টার
ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের চরব্রাক্ষন্দি গ্রামের মধ্য অফ্রিকার ইয়োলোকে শান্তিরক্ষা মিশনে সড়ক দুর্ঘনায় নিহত আরজানের পরিবারের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর সৈয়দ কামরুল হাসান বীর। ওই সময় উপস্থিত ছিলেন সদরপুর উপজেলার এসিল্যান্ড ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও মোঃ জোযায়ের রহমান রাশেদ।
আরজানের স্ত্রী চায়না বেগম ও মা রহিমা খাতুন লাশটি গ্রহন করেন। লাশ হস্তান্তর শেষে নিহত সৈনিক আরজান কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা সম্মান জ্ঞাপন করে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর সম্মান দল। লাশ হাতে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নিহতের স্বজনরা।
আজ শুক্রবার সকাল থেকেই আরজানের আত্বীয় স্বজনরা নিহতের লাশ দেখতে বাড়িতে জড়ো হয়। স্বজনের আহাজারিতে ওই সময় পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। স্বজনদের পাশাপাশি পুরো এলাকার শত শত গ্রামবাসী জানাযায় অংশ নেয়। বিকেল সাড়ে ৫টার প্রথমে ঢেউখালী উচ্চ বিদ্যালয় পরে দ্বিতীয়দফা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সদরপুর উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদে জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে আরজানের লাশ সদরপুর ইউনিয়নের চৌদ্দরশি গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে গার্ড অব অর্নার দিয়ে দাফন সম্পূর্ন করা হয়। মিশন শেষ করে এই জমিতে বসতবাড়ি উত্তোলনের প্রস্তুতিও নিয়ে ছিলো আরজান বলেও জানা যায়।
উল্লেখ্য,অভিযানিক দায়িত্ব পালনকালে গত শনিবার ২৬মে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬.৪৫মিনিটে মধ্য অফ্রিকার ইয়ালোক নামকস্থানে মিশনের কাজে ব্যবহ্নত গাড়ি উল্টে গেলে দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে নিহত হন। আরজানের মৃত্যুর খরব ২৭মে পরিবারের কাছে এলে স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠে এলাকার পরিবেশ।
পারিবারিক সুত্রে জানান, বাবা মারা যাওয়ার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হয়ে পড়েন তিনি। ছোট ভাই মোঃ আরিফ হোসেন সিলেটের স্যাপরুন গ্যাস কোম্পানিতে চাকুরী করে। মা স্ত্রী ও চার বছরের পুত্র ফাহিম আহম্মেদ কে বসবাস করতেন।
পারিবারিক সুত্রে আরও জানা যায়, আরজান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সৈনিক পদে চাকরি করতেন। ২০০৪সালে এইচএসসি পাশ করে তিনি সেনা বাহিনীতে চাকুরী নেয়। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের চরব্রাক্ষন্দী গ্রামের মৃত মোঃ করিম হাওলাদারের পুত্র আরজান। পরিবারের দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সে ছিলো সকলের বড়। বাবা করিম হাওলাদারের মৃত্যুর পর মা রহিমা খাতুন দরিদ্র পরিবারকে নিয়ে চলে যান বাবার বাড়ীতে। সেই পরিবারের বড় হন আরজান। লেখা-পড়া শেষে সেনাবাহিনীতে চাকরি নিয়ে পরিবারের হাল ধরেন তিনি।
আরজানের স্ত্রী চায়না বেগম জানান, ২৬মে আরজানের সাথে শেষ কথায় মোবাইলে ভিডিও কলে। সে তখন জানিয়েছিলো, আমি এখন গাড়ীতে ক্যাম্পে যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে কথা হবে। এর পরে তার সাথে আর কথা হয়নি। আরজান ও চায়না দম্পতির একমাত্র সন্তার পাচ বছরের ফাহিম আহমেদ। এখনো স্কুলে ভর্তি হয়নি।