১২ মে ২০২৪, রবিবার | বাংলা কনভার্টার
ফরিদপুর জেলার সদরপুরের চরব্রাক্ষণদি গ্রামের দরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি মোঃ আরজান হাওলাদার। গত ২৬ মে মধ্য আফ্রিকায় জাতি সংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত থাকা অবস্থায় সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান তিনি। না ফেরার দেশে চলে যাওয়াতে তার গ্রামের বাড়ী ফরিদপুরের সদরপুরে চলছে শোকের মাতম। পরিবার বিদেশ থেকে তার লাশ হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় দিনরাত কান্নাকাটি করছেন।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, আরজান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সৈনিক পদে চাকরি করতেন। ২০০৪সালে এইচএসসি পাশ করে তিনি সেনা বাহিনীতে চাকুরী নেয়। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের চরব্রাক্ষন্দী গ্রামের মৃত মোঃ করিম হাওলাদারের পুত্র আরজান। পরিবারের দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সে ছিলো সকলের বড়। বাবা করিম হাওলাদারের মৃত্যুর পর মা রহিমা খাতুন দরিদ্র পরিবারকে নিয়ে চলে যান বাবার বাড়ীতে। সেই পরিবারের বড় হন আরজান। লেখা-পড়া শেষে সেনাবাহিনীতে চাকরি নিয়ে পরিবারের হাল ধরেন তিনি।
আরজানের স্ত্রী চায়না বেগম জানান, ২৬মে আরজানের সাথে শেষ কথায় মোবাইলে ভিডিও কলে। সে তখন জানিয়েছিলো, আমি এখন গাড়ীতে ক্যাম্পে যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে কথা হবে। এর পরে তার সাথে আর কথা হয়নি। আরজান ও চায়না দম্পতির একমাত্র সন্তার পাচ বছরের ফাহিম আহমেদ। এখনো স্কুলে ভর্তি হয়নি।
আরও জানা যায়, অভিযানিক দায়িত্ব পালনকালে শনিবার ২৬মে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬.৪৫মিনিটে মধ্য অফ্রিকার ইয়ালোক নামকস্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আরজানের মৃত্যু খরব ২৭ মে পরিবারের কাছে এলে স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠে এলাকার পরিবেশ। একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বজনকে হারিয়ে দিশেহারা সকলেই। পরিবারের দাবি দ্রুত আরজানের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের,এবং হতভাগ্য পরিবারটির সুষ্ঠ ভাবে বেচে থাকার নিশ্চয়তা দেওয়ার।
সদরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বাবুল জানান, ৬ মাস আগে জাতি সংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে জান আরজান।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া এ বিষয়ে জানান, আমার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের যোগাযোগ রাখছি কবে লাশ পৌছবে। এছাড়াও শোকাহত পরিবারের পাশে স্থানীয় প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সরকার এই সংক্রান্ত সকল প্রক্রিয়া যথা সম্ভব দ্রুত সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করবে।