১০ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার | বাংলা কনভার্টার
‘ভাল থাক ভালবাসার অপু। সবার কাছে প্রেম ভালবাসা অভিনয় বা খেলা নয়। কেউ কেউ ভাবে প্রেম ভালবাসা বিয়ে পবিত্র একটা জিনিস। আরে তুমিতো কোরআন মসজিদকে অবিশ্বাস করলে তো আমাকে কি বিশ্বাস করবে। সুখি হও। তোমার কাছে অনুরোধ আমাকে দেখতে এসো কিন্তু চোখ ঢেকে এসো। ভাল থেকো। ইতি, সেতু।’
মনের মধ্যে এমনি চাপা কষ্ট পুষে রাখা অভিব্যক্তি স্বামীর উদ্দেশে চিরকুটে লিখে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন মাহিমা আক্তার সেতু (১৮) নামে এক কলেজছাত্রী।
সেতু যশোরের মণিরামপুর উপজেলার স্মরণপুর গ্রামের মুক্তার আলীর মেয়ে। পরিবারের অমতে তিনি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। স্বামী মুস্তাফিজুর রহমান অপুর পরিবার মেনে না নেয়ায় এমনিতেই কষ্টে ছিলেন সেতু।
এদিকে সম্প্রতি স্বামী অপু দ্বিতীয় বিয়ের পিঁড়িতে বসায় মেনে নিতে পারেনি সেতু। ভালোবাসার মানুষটির বিশ্বাঘাতকতা মেনে নিতে না পেরেই সোমবার উপজেলার স্মরণপুর গ্রামের নিজ শোবার ঘরের সিলিং ফ্যানে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন সেতু। তার আত্মহত্যার খবর পেয়ে সোমবার দুপুরের দিকে খেদাপাড়া ক্যাম্প পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
সেতু এবার ঝিকরগাছা হাজের আলী মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সেতু ২০১৬ সালের ১৬ জুন পরিবারের অমতে ভালোবেসে মুস্তাফিজুরকে বিয়ে করেন। মুস্তাফিজুর একই গ্রামের ফল ব্যবসায়ী আব্দুল মমিনের ছেলে। সেতুকে রেখে মুস্তাফিজুর সপ্তাহ খানেক আগে ঝিকরগাছা উপজেলার বোদখানা এলাকার একটি মেয়েকে বিয়ে করেন। এতেই স্বামী অপুর ওপর রাগে-ক্ষোভে সেতু আত্মহত্যা করেছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সেতুর বড়ভাই সাগর বলেন, বিয়ের পর অপু মালয়েশিয়ায় যায়। আর সেতু তাদের কাছেই থাকতো। স্বামীর বাড়ি যাওয়া হয়নি কখনো। বিদেশ থেকে ফেরার পর মুস্তাফিজুর মাঝে মধ্যে তাদের বাড়িতে আসতো। এর মধ্যে বোদখানা এলাকার অপর একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম করে মুস্তাফিজুর। সপ্তাহ খানেক আগে ওই মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে তোলে অপু। এতে অভিমান করে সেতু আত্মহত্যা করেছে। বোনের আত্মহত্যার জন্য মুস্তাফিজুরের শাস্তি দাবি করছি।
মণিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকাররম হোসেন বলেন, সেতুর মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে থানায় মামলা হয়েছে। চিরকুটটি পুলিশের হেফাজতে আছে বলেও তিনি জানান।