১৯ জানুয়ারি ২০২৫, রবিবার | বাংলা কনভার্টার
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের বাকপুরা গ্রামে মাদ্রাসার নামে অসহায় এক পরিবারের জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে ভাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীর পরিবারের মোঃ সাইদ আলী। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানার এস আই পরিদর্শক মোঃ সফিকুল ইসলাম অভিযোগের তদন্ত করতে মাঠে নেমেছেন বলেও জানা গেছে।
ঘটনা সুত্রে জানা যায়, ৮৭নং বাকপুরা মৌজার আর এস ২৬৯,এস এ ২২৮,বিএস ১০৭১ নং খতিয়ানে সাবেক ৩০১ হাল ৭৬২নং দাগে জায়গার উপর মাদ্রাসার নামে অবৈধভাবে একটি ঘর উত্তোলন করে তৎকালীন বাকপুরা ফোরকানীয়া মাদ্রাসার সেক্রেটারী মোঃ সফি উদ্দিন জমাদ্দার। তিনি পরবর্তীতে মাদ্রাসা নির্মানের জায়গা সঠিক ভাবে নির্ধারণ করা হয়নি বলে তৎকালে তিনি এলাকাবাসীকে জানিয়েছেন। তার কথার সত্যতা স্বীকার করে মাদ্রাসার বর্তমান সেক্রেটারী এমদাদুল হক চৌধুরী। এছাড়াও তিনি বর্তমানে ওই জায়গায় নির্মিত মাদ্রাসা ঘরটি অন্যত্র সাবেক(৩০২)দাগে সরিয়ে নেওয়ার জন্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার কে। ভুক্তভোগী পরিবার হিসাবে রয়েছেন বাকপুরা গ্রামের মৃত মোবারেক মোল্যার পুত্র মোঃ সাইদ আলী ও তার সহোদর ইয়াদ আলী। পৈত্তিক সুত্রে সাবেক ৩০১ হাল ৭৬২নং দাগে সাড়ে ১২শতাংশ জমি আরএস,এসএ ও বিএস রেকর্ড রয়েছে এই ভাইয়ের বাবা মোবারেক মোল্যার নামে। সম্প্রতি বাকপুরা গ্রামের মোঃ দেলোয়ার জমাদ্দার,বদর জমাদ্দার,ওবায়দুর মোল্যা,মামুন খান,বককার জমাদ্দার ওই জমি জবরদখল ও আতœসাৎ করার কাজে লিপ্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের পুত্র মোঃ সাইদ আলী ও তার ভাই ইয়াদ আলী। মোঃ সাইদ আরী জানান, বিগত সময়ে আমরা নাবালক ছিলাম। মা বিধবা থাকার সুযোগে বাকপুরা ফোরকানীয়া মাদ্রাসার তৎকালিন সেক্রেটারী মরহুম মোঃ সফি উদ্দিন জমাদ্দার ভূলবশত আমাদের পৈত্তিক ভিটায় মাদ্রাসা ঘর উত্তোলন করে। বর্তমানে আমরা আমাদের জায়গা থেকে মাদ্রাসা ঘরটি অন্যত্র (মাদ্রাসা নিজস্ব)জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানালে এলাকার কতিপয় ব্যক্তি আমাদের জায়গা ফেরত না দেয়া এবং নিজেদের দখলে রাখার জন্যে কালক্ষেপন করতে ব্যস্ত রয়েছে। আমি এলাকার সাধারণ মানুষ হওয়ায় তাদের সাথে কোনোভাবেই পেরে উঠতে সক্ষম না হওয়ায় ভাঙ্গা থানায় একটি জিডি (নং ৭৬১/১৭-০৬-১৮) ইং তারিখে দায়ের করতে বাধ্য হয়েছি।
এ ব্যাপারে ওই মাদ্রাসার বর্তমান সেক্রেটারী এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, আমি এ বিষয় নিয়ে একাধিকবার শুনেছি। আমিও চাই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অন্যের জায়গায় না রেখে মাদ্রাসার নিজস্ব জায়গায় প্রতিস্থাপন করার জন্যে। কিন্তু এলাকার দেলোয়ার গংদের জন্যে জন্যে সুষ্ঠ সমাধান দেওয়া যাচ্ছে না।
একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি সৈয়দ সুপন, মোঃ আনোয়ার হোসেন খন্দকার ও সৈয়দ নূরে আলম পাইলট ও শিক্ষক মোঃ মাসুদ আলম,বলেন, আমরা পূর্ব থেকেই দেখছি এবং কাগজপত্রে ভুক্তভোগীদের জমি সঠিক রয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে কিন্তু এর কোনো সুরাহা হয়নি। ভুক্তভোগীর দাবী সঠিক রয়েছে। আমরাও ওই মাদ্রাসার ঘরটি মাদ্রাসার জায়গায় নিতে চাই।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার এস আই উক্ত এলাকায় তদন্ত করে অভিযোগকারীর অভিযোগের সত্যতা পান। প্রাথমিক ভাবে তিনি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে আপোষ মিমাংসা করার জন্যে বলেন। মোঃ সফিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনার সর্ম্পকে বলা যাবে।
এ ব্যাপারে দেলোয়ার জমাদ্দার জানান, মাদ্রাসার ক্রয়কৃত নিজস্ব সম্মত্তি সাড়ে ১০শতাংশ সাবেক ৩০২দাগে রয়েছে। এ নিয়ে তিনি পরে কথা বলবেন বলে জানান।